ভালো ছবি তোলার জন্য এখন আর আলাদাভাবে ক্যামেরা কেনার প্রয়োজন হয় না। আমাদের সবার হাতেই রয়েছে স্মার্টফোন এবং এর সঙ্গে যুক্ত আছে স্মার্ট ক্যামেরা। মোবাইলের এই ক্যামেরা ব্যবহার করেই ছবি তুলে তা অনলাইনে বিক্রি করা যায় এবং এর মাধ্যমে উপার্জন করা যায় বেশ কিছু অর্থ।
আমাদের এই আর্টিকেলে কিভাবে অনলাইনে মোবাইল বা ক্যামেরা দ্বারা তোলা ছবি বিক্রি করে ইনকাম করা যায় অর্থাৎ, সহজ ভাষায় অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার উপায় সমূহ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রথমেই বলে রাখি, প্যাশন ছাড়া এই কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ছবি তোলা যাদের শখ, শুধুমাত্র তাদের কাছেই অনলাইনে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করা ডাল ভাত মনে হবে।
বাকিরা শুরু করার দুইদিন পরই ফটোগ্রাফার ক্যারিয়ার হতাশার সাগরে ডুবিয়ে মারবে।
কিভাবে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা যায় ?
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে ইনকাম করার কথা আজও অনেকে জানে না। আবার এই সেক্টরে প্রচুর ইনকাম করা মানুষের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়।
সময়ের সাথে ফটোগ্ৰাফি করে আয় এর সুযোগ দিন দিন বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে এর সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানুষের সংখ্যাও।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর মূলত দুটি উপায় রয়েছে। সেগুলো হলো –
নিজস্ব ওয়েবসাইট
নিজস্ব ওয়েবসাইটে আপনি নিজের তোলা ছবি আপলোড করে আয় করতে পারবেন। এজন্য প্রথমে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ব্লগার বা ওয়ার্ডপ্রেস যেকোনো প্লাটফর্ম বেছে নিতে পারেন। যেহেতু, অনলাইনে আয়ের উদ্দেশ্যেই ওয়েবসাইটটি তৈরি করছেন, তাই ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে নিয়ে শুরু করাই ভালো।
ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনি কোনো ওয়েব ডেভেলপারের সাহায্য নিতে পারেন। অথবা নিজেও করতে পারেন। তবে তার আগে অবশ্যই এ সম্পর্কে বেসিক ধারণা নিয়ে নিতে হবে।
আমাদের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউবে এ বিষয়ে প্রচুর টিউটোরিয়াল পাবেন।
ওয়েবসাইটটি প্রস্তুত হয়ে গেলে সেখানে নিয়মিত ছবি আপলোড করতে হবে। ছবি আপলোড করলেই আয় শুরু হয়ে যাবে না; এর জন্য ছবিগুলো বিক্রি হতে হবে।
তাই দেখতে হবে, আপনার ছবিগুলো ক্লায়েন্টের চাহিদা পূরণ করতে পারছে কিনা। আর এজন্য ছবিগুলো হতে হবে প্রোফেশনাল মানের।
স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো- বিভিন্ন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করা।
এজন্য শুধু আপনাকে কিছু স্টক ইমেজ সাইটে গিয়ে সাইন আপ করতে হবে। সাইন আপের জন্য প্রয়োজন হবে আপনার নাম, ঠিকানা, ইমেইল এড্রেস, মোবাইল নাম্বারসহ আরো কিছু তথ্য । বেশিরভাগ সাইটে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য কোন ফি দিতে হয় না।
নিয়মিত মানসম্মত ছবি আপলোড করলে খুব দ্রুত আপনার ছবিগুলো বিক্রি হতে শুরু করবে। আর যখনি কোনো ক্লায়েন্ট এসব সাইট থেকে আপনার কোন ছবি কিনে নেবে, তার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনাকে কমিশন হিসেবে দেয়া হবে।
মনে রাখবেন, একটি ছবি শুধুমাত্র একবার নয়, বিক্রি হতে পারে কয়েক হাজার বারও! এবং প্রত্যেকবার ছবি বিক্রির জন্য আপনাকে কমিশন দেয়া হবে।
অনেক ওয়েবসাইটে আপনার ছবির মূল্য আপনি নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন। স্টক ইমেজ সাইটের আরেকটি ভালো দিক হলো, একটি ছবি আপনি একাধিক সাইটে বিক্রি করতে পারবেন। (তবে সকল স্টক ইমেজ সাইটই আপনাকে এ অনুমতি দেবে না।)
নিজস্ব ওয়েবসাইট Vs স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট
নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর সময় ও শ্রম। একটি নতুন ওয়েবসাইটে ভিজিটর পাওয়া চারটি খানি কথা নয়। আর এখানে তো প্রয়োজন ক্রেতা!
অনলাইনে ছবি বিক্রির প্রচুর ওয়েবসাইট আছে। সেখানে আছে কয়েকশ মিলিয়ন প্রোফেশনাল মানের ছবি। ছবির জন্য ক্লায়েন্ট অবশ্যই সে সাইটগুলো বেছে নেবে।
অনলাইনে ফটোগ্ৰাফি ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে ক্লায়েন্ট ধরে আনতে হবে। শুধু তাই নয়, সেইসাথে তাদের ধরেও রাখতে হবে! এবং তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর সময়, দক্ষতা ও পরিশ্রমের।
নিজস্ব ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করে আয় এর সুবিধা হলো এখানে ছবি বিক্রির সম্পূর্ণ টাকাটাই হবে আপনার। এজন্য কাউকে কোন কমিশন দিতে হবে না।
কিন্তু নিজস্ব ওয়েবসাইটে ছবি বিক্রি করে ইনকাম এর পথ আপনার জন্য মোটেও সহজ হবে না। খুব বেশি পরিশ্রমী ও ধৈর্য্যশীল না হলে এই আইডিয়া মাথায় না আনাই ভালো। শুধু ভালো নয় খুবই ভালো! আপনার সময় ও শ্রম দুটোই বাঁচবে।
স্টক ইমেজ সাইটে ছবি বিক্রি করে আয় করা অনেকটাই সহজ। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইট তৈরির আলাদা কোনো ঝামেলা নেই। তাই সম্পূর্ণ মনোযোগটাই আপনি দিতে পারবেন ফটোগ্ৰাফিতে। ছবিগুলো মানসম্মত হলে ফটোগ্ৰাফি করে আয় আপনার জন্য মোটেও কঠিন হবে না।
তবে, স্টক ইমেজ সাইটে বিক্রি হওয়া ছবির সম্পূর্ণ টাকাটাই আপনি পাবেন না। প্রতিবার ছবি বিক্রির জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনাকে কমিশন হিসেবে দেয়া হবে।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য, আমি আপনাকে স্টক ইমেজ সাইটে রেজিষ্ট্রেশনের পরামর্শই দেব। এ পথটাই সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী। এখানে আপনার ছবিগুলো বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর এবং আপনি এখান থেকে খুব দ্রুত আয় শুরু করতে পারবেন।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করতে কি কি প্রয়োজন হবে?
আপনি যদি ফটোগ্ৰাফি করে আয় এর কথা ভেবে থাকেন তাহলে প্রস্তুতি নেয়া শুরু করুন।
এখানে আপনি একা নন; যে কিনা অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করতে চাচ্ছে। আপনার মতোই হাজার মিলিয়ন মানুষ আছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার প্রোফেশনাল ফটোগ্ৰাফার। নন-প্রোফেশনাল অনেকের ছবিও প্রোফেশনাল মানের!
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য সাধারণ ৩ টি বিষয় প্রয়োজন হবে।
- একটি ভালো ক্যামেরা (সেটা আপনার স্মার্টফোনের ক্যামেরাও হতে পারে)।
- ফটোগ্ৰাফি ও ফটোইডিট সম্পর্কে জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা।
- নিজস্ব ওয়েবসাইট/স্টক ইমেজ সাইটে একটি একাউন্ট।
ক্যামেরা
অনলাইনে এত এত ছবির ভিড়ে ক্লায়েন্টরা সবসময় সেরা ছবিটিই বেছে নেবে। বুঝতেই পারছেন অনলাইনে ছবি বিক্রি করে ইনকাম এর প্রতিযোগিতা ঠিক কতটা কঠিন! ছবি তুলে আয় করে ফটোগ্ৰাফি ক্যারিয়ার গড়তে আপনাকে এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। আর এজন্য প্রথমেই প্রয়োজন একটি ভালো ক্যামেরা।
হাতে থাকা স্মার্টফোনও হতে পারে ফটোগ্রাফি ক্যামেরার বিকল্প। তাই আপনার যদি ডিএসএলআর বা ডিজিটাল ক্যামেরা না থাকে তাহলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
ফোনের ক্যামেরা যথেষ্ট ইফেক্টিভ না হলে আপনি প্লে-স্টোর থেকে কিছু সেরা এ্যপ্লিকেশন ডাউনলোড করে নিতে পারেন। ছবি বিক্রি করে আয় করতে প্রোফেশনাল ফটোগ্ৰাফির জন্য কিছু সেরা এ্যপ্লিকেশন হলো-
Free Applications
Google Camera
Footej Camera
Simple Camera
Your stock camera app
Camera360
Camera MX
Z Camera
Cymera
Candy Camera
Free + Paid Application
A Better Camera
Bacon Camera
VSCO
Adobe Lightroom and Adobe Photoshop Camera
Photoshop Camera
Cymera
Filmic Pro
SayCheese
Pixtica
ProCam X
Open Camera
Camera MX
Snap Camera HDR
Manual Camera
Paid Application
DSLR Camera Pro
Manual Camera
Camera FV-5
ProShot
Camera Zoom FX
শুধু ক্যামেরা এ্যপ ইনস্টল করেই আপনার কাজ শেষ নয়। সেইসঙ্গে প্রয়োজন এ্যপের ব্যবহার সম্পর্কে জানা। এজন্য এ্যপের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো নেড়েচেড়ে দেখা প্রয়োজন। দেখে নেয়া প্রয়োজন কোন মুড/ইফেক্টটি কোন ধরণের ছবির জন্য পারফেক্ট।
জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা
ছবি বিক্রি করে ইনকাম করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রতিনিয়ত নিজের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানো।
ফটোগ্ৰাফি সম্পর্কে শুধু প্রাথমিক ধারণা নয়, প্রয়োজন বিস্তারিত জ্ঞান। ছবির লাইট, কালার, এ্যাঙ্কেল, রেজুলেশন, ফোকাস, ফ্রেমিং, ব্যাকগ্রাউন্ড, ভিউ পয়েন্ট কি, কেন, কিভাবে সবকিছুই জানতে হবে বিশদভাবে।
এজন্য নিয়মিত ফটোগ্ৰাফি বিষয়ক প্রতিবেদন/বই পড়তে পারেন। গুগলে আপনি এ বিষয়ে অনেক আর্টিকেল পেয়ে যাবেন। ফটোগ্ৰাফি বিষয়ক প্রাথমিক ধারণার জন্য এই আর্টিকেল দুটি পড়ে দেখতে পারেন।
- হয়ে উঠো একজন প্রো মোবাইল ফটোগ্রাফার!
- ফটোগ্রাফিতে কিছু নিয়ম
ছবি তুলে আয় এর জন্য আপনার অভিজ্ঞতা থাকাটাও জরুরী। ফটোগ্ৰাফিতে আপনার জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা যত বাড়বে ততই আপনি এ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে পারবেন। তাই চেষ্টা করুন নিজের স্কিল ডেভেলপ করার। সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি এ বিষয়ে অনলাইন/অফলাইনে মোটামুটি ধরণের একটি কোর্স করে নেন।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য আপনার ফটোইডিটের দক্ষতা থাকাও জরুরী। তাই ফটো ইডিট সম্পর্কে যতটা সম্ভব গভীরে গিয়ে জানার চেষ্টা করুন। এডোবি ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটরের উপর দক্ষতা থাকলে এক্ষেত্রে আপনি অনেক এগিয়ে থাকবেন।
আর যদি মোবাইল ফটোগ্ৰাফি করে আয় এর কথা ভেবে থাকেন তবে আপনার কিছু এ্যাপ সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। মোবাইলে ছবি ইডিটের কিছু সেরা এ্যপ্লিকেশন হলো-
- Photo Effects Pro – free
- InShot Photo Editor Pro (free + paid)
- Fotor Photo Editor (Free with in-app purchases)
- PhotoDirector Photo Editor (free + paid)
- VSCO Photo & Video Editor (free + paid)
- Enlight Pixaloop (free + paid)
- Photo Lab Picture Editor (free + paid)
- Photo Mate R3 (free + paid)
- Adobe apps {যেমন: include Adobe Photoshop Express, Adobe Photoshop Mix, and Adobe Lightroom} (free + paid)
- PicsArt (free + paid)
- Pixlr (free + paid)
- Pixlr (free + paid)
- AirBrush (free + paid)
- Vimage (free + paid)
- TouchRetouch (paid)
- Snapseed (paid)
নিজস্ব ওয়েবসাইট / স্টক ইমেজ সাইটে একটি একাউন্ট
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য তৃতীয়ত আপনার প্রয়োজন হবে- বিক্রির জায়গা। এজন্য আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। অথবা স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটে সাইন আপ করে একজন কন্ট্রিবিউটর হতে হবে।
অনলাইনে স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটের সংখ্যা প্রচুর। এসব সাইটে ছবি আপলোডের নিয়ম এবং কমিশনের পরিমাণও আলাদা। তাই সাইন আপের আগে স্টক ইমেজ সাইটটির Terms and Conditions এবং Service খুব ভালো করে পড়ে নিতে হবে।
অন্যান্য
যেহেতু আপনি অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করতে চাচ্ছেন; তাই আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। কারণ ছবি আপলোড করে আয় এর সম্পূর্ণ পদ্ধতিটিই ইন্টারনেট নির্ভর।
সর্বোপরি আপনার মধ্যে প্রচুর ধৈর্য্য ও প্রচেষ্টা থাকতে হবে। একটুতেই হাল ছেড়ে দেয়ার মনোভাব থাকলে; ফটোগ্ৰাফি করে আয় আপনার দ্বারা সম্ভব নয়!
ছবিগুলো কারা কেনেন? কেন কেনেন?
বিভিন্ন ওয়েবসাইট, কর্পোরেশন সংস্থা, গণমাধ্যম, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, ডিজাইনার, মার্কেটার, ই-কমার্স সাইটে অনলাইন জগৎ আজ জমজমাট। বিজ্ঞাপনী সংস্থা থেকে শুরু করে ব্লগার সবারই কোন না কোন কাজে ছবি প্রয়োজন।
গাছপালা, ফুল-ফল, পাহাড়-নদী, জীবনযাত্রা, খাবার-দাবার, উৎসব, যানজট, আন্দোলন, পোশাকসহ এখন প্রায় সকল ধরণের ছবিরই চাহিদা প্রচুর।
গণমাধ্যম, ব্লগ বা ই-কমার্স সাইটে প্রয়োজনীয় ছবির জন্য আলাদা করে ফটোশুট করা অনেক বেশি ঝামেলার ও ব্যয়বহুল। তাই তাদের বিভিন্ন স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট থেকে ছবি কিনতে হয়।
সাধারণ সার্চেই অনেক ছবি পাওয়া যায় সত্যি। কিন্তু সেগুলো ব্যবহারে কপিরাইট ক্লেইম আসার ভয় থাকে। কারণ পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই কপিরাইট আইন আছে। এবং সার্চ ইঞ্জিনগুলো (Google, Yahoo, Bing) এই আইনের ব্যাপারে অনেক বেশি কঠোর।
অনলাইনে এমন কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখান থেকে রয়্যালিটি ফ্রি ছবি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়। Pixels.com, Pixabay, Unplash এমনি কিছু ওয়েবসাইট। আমাদের দেশে এসব ছবি ব্যবহারের প্রচলন বেশি। তবে অন্যান্য দেশে রয়্যালিটি ফ্রি ছবির জন্য মানুষ স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটের উপর নির্ভর করে।
স্টক ইমেজ সাইটে ছবির কোয়ালিটি এবং ছবি ব্যবহারের স্বাধীনতা এই নির্ভরশীলতার মূল কারণ। এবং ভবিষ্যতে আমাদের দেশের ব্লগার-মার্কেটাররাও এসব ছবির উপর নির্ভর করবে।
এভাবে আপনি যেমন অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারবেন তেমনি ছবির জন্য তাদের আলাদা করে ফটোশুট করতে হবে না।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় কতটা লাভজনক?
অনলাইনে ছবি বিক্রি করা আপনার জন্য কতটা লাভজনক; তা নির্ভর করবে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর।
ছবির কোয়ালিটি
আপনার ছবিগুলো কি যথেষ্ট কোয়ালিটিফুল? সাধারণ মানের ছবি কখনোই ক্লায়েন্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে না। ফটোগ্ৰাফি করে আয় করতে হলে আপনাকে কোয়ালিটি সম্পন্ন ছবি তুলতে হবে। ছবির রেজুলেশন, আলোর প্রভাব, কোণ সবকিছু খেয়াল রাখতে হবে।
ইডিটও করতে হবে নিখুঁত ভাবে। মোটকথা আপলোডের জন্য আপনাকে খুব খেঁটেখুঁটে এবং সময় নিয়ে একটি ছবি তৈরি করতে হবে। স্টক ইমেজ সাইটে কোয়ালিটিফুল ছবির সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন। এত ছবির মধ্যে ক্লায়েন্ট সে ছবিটিই বেছে নেবে যেটায় বিশেষত্ব থাকবে।
সেইসাথে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ছবি তোলাটাও জরুরী। বিভিন্ন স্টক ইমেজ সাইটের ছবিগুলো নিয়ে রিসার্চ করলে; আপনি ক্লায়েন্টদের চাহিদা সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন।
ছবি আপলোডের সংখ্যা
কোয়ালিটির পর অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর পরিমাণ নির্ভর করবে- ছবির সংখ্যার উপর। সাইটে আপলোড করা ছবির সংখ্যা যত বেশি হবে তা বিক্রির সম্ভবনাও তত বাড়বে। এবং সেইসাথে আপনার আয় এর সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
তাই প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ টি ছবি আপলোড করুন। তাহলে মাসে তার সংখ্যা দাড়াবে ৭×৩০=২১০ বা ৮×৩০=২৪০! এবং ৬ মাসে ছবির মোট পরিমাণ হবে ২১০×৬=১২৬০ বা ২৪০×৬=১৪৪০!
প্রতি ছবি বিক্রিতে কমিশন
প্রতিবার ছবি বিক্রিতে কমিশনের উপরও আপনার আয় নির্ভর করবে। স্টক ইমেজ সাইটভেদে সাধারণ ২৫%-৮৫% পর্যন্ত কমিশন দেয়া হয়।
প্রতিবার ছবি বিক্রিতে ০.২৫ ডলার দেয়া হলে ৫০ টি ছবি বিক্রিতে আপনার আয় হবে ০.২৫×৫০=১২.৫ ডলার বা ১২.৫×৮৪.৭৫=১০৫৯.৩৭৫ টাকা।
আবার প্রতি ছবি বিক্রিতে ৫ ডলার করে দেয়া হলে ৫০ ছবির জন্য আপনার আয় হবে ২১,১৮৭.৫ টাকা।
ছবি বিক্রির ধরণ
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর পরিমাণ নির্ভর করে প্রতি ছবি বিক্রিতে প্রাপ্ত কমিশনের উপর এবং এই কমিশন অনেকটাই নির্ভর করবে- ছবি বিক্রির ধরণের উপর। স্টক ইমেজ সাইটগুলোতে আপনার ছবিগুলো দুটি লাইসেন্সে বিক্রি হতে পারে, Exclusively এবং Non-exclusively.
প্রতিবার ছবি আপলোডের আগে এক্সুসিভ বা নন-এক্সুসিভ সিলেক্ট করে দিতে হয়।
Exclusive License: এই লাইসেন্স অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট ছবি আপনি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটেই বিক্রি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে একাধিক ওয়েবসাইটে একই ছবি আপলোড করে আয় এর সুযোগ আপনি পাচ্ছেন না।
Exclusive License এ প্রতি ছবি বিক্রিতে তুলনামূলক বেশি কমিশন দেয়া হয়। তবে শুধুমাত্র একটি ওয়েবসাইটে ছবি আপলোড করা হয় বলে তা বিক্রির সম্ভাবনা খুবই কম। তাই এক্ষেত্রে ফটোগ্ৰাফি করে আয় এর পরিমাণও কম হবে।
Non-exclusive License: এ লাইসেন্স অনুযায়ী আপনি একটি নির্দিষ্ট ছবি একাধিক সাইটে আপলোডের সুযোগ পাবেন।Non-exclusively প্রতি ছবি বিক্রিতে আপনাকে তুলনামূলক কম কমিশন দেয়া হবে। তাই অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর পরিমাণও হবে কম।
তবে একাধিক ওয়েবসাইটে ছবি আপলোড করায় তা বিক্রির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর ছবি বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া মানে আয়ের পরিমাণও বেড়ে যাওয়া। আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে Non-exclusively বিক্রির পরামর্শই দেব।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় শুরু হতে কতদিন লাগবে?
এ প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করবে দুটি বিষয়ের উপর।
- ছবির কোয়ালিটি
- ছবি আপলোডের সংখ্যা
আপনি কি নিয়মিত প্রচুর ছবি আপলোড করে চলেছেন? আপনার ছবিগুলো কি ক্লায়েন্টের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য উপযোগী? আপনি কি একাধিক সাইটে ছবি আপলোড করছেন? আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়; তবে শ্রীঘ্রই আপনি টাকার মুখ দেখতে চলেছেন।
হাই কোয়ালিটির ছবি আপনার ফটোগ্ৰাফি ক্যারিয়ার এ সফলতার প্রথম শর্ত। সেইসাথে ছবি আপলোডের পরিমাণ যত বেশি হবে ততই আপনার পরিচিতি বাড়বে। একাজগুলো আপনি যত তাড়াতাড়ি করতে পারবেন; তত দ্রুত আপনার আয় শুরু হবে।
অন্তত ৫-৭ টি স্টক ইমেজ সাইটে ছবি আপলোডের চেষ্টা করুন। তাতে আপনার ছবিগুলো বিক্রির সম্ভাবনা প্রচুর বেড়ে যাবে।
তবে মোটা অংকের টাকা আয়ের জন্য অন্তত ৬ মাস লাগবেই লাগবে। খুব বেশি করে খাটলে ৩-৪ মাসেও সম্ভব। তবে এর আগে সফলতার আশা করা বোকামি।
পেমেন্ট কিভাবে হাতে পৌঁছাবে?
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা টাকা কিভাবে তুলবেন; তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। স্টক ইমেজ সাইটে আপলোড করা ছবি বিক্রি হলে তা থেকে আপনাকে কমিশন দেয়া হবে। সে কমিশন জমা হবে আপনার স্টক ইমেজ সাইট একাউন্টে।
একাউন্টে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা হলেই আপনি সেটা তুলতে পারবেন। স্টক ইমেজ সাইটগুলো আমাদের দেশের নয়। তাই টাকা তুলতে আপনাকে কিছুটা জটিল পদ্ধতির ভেতর দিয়েই যেতে হবে।
লোকাল ব্যাংক
আজকাল প্রায় সবারই লোকাল ব্যাংক একাউন্ট আছে। এই একাউন্টের মাধ্যমেই আপনি আয় করা টাকা হাতে পেয়ে যাবেন। সেটা DBBL, EBL, ইসলামিক ব্যাংক, অগ্ৰণী ব্যাংকসহ যেকোন লোকাল ব্যাংক হতে পারে।
প্রায় সকল স্টক ইমেজ সাইটেই “WIRE Transfer” এর মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফারের সুবিধা দেয়া হয়। অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা টাকা তোলার জন্য আপনার প্রয়োজন হবে: একটি ব্যাংক একাউন্ট, একাউন্ট নাম্বার, সে ব্রাঞ্চের SWIFT code এবং ব্যাংকের ঠিকানা।
একাউন্টের নাম অবশ্যই স্টক ইমেজ সাইট একাউন্টের নামে হতে হবে। এবং ব্যাংক ও স্টক ইমেজ সাইট একাউন্টে কোন ভুল তথ্য দেয়া যাবে না। ছবি বিক্রি করে আয় করা টাকা আপনার লোকাল ব্যাংক একাউন্টে আসতে ১-৬ দিন লেগে যাবে।
Payoneer MasterCard
Payoneer MasterCard ব্যবহার করে এটিএম বুথের মাধ্যমে, দেশের যেকোন জায়গা থেকে যেকোন সময় টাকা তোলা যায়। এ কার্ডের সঙ্গে আপনাকে একটি আমেরিকান ব্যাংক একাউন্ট ও ইউরোপিয়ান ব্যাংক একাউন্ট দেয়া হবে।
যে সকল স্টক ইমেজ সাইটে লোকাল ব্যাংক ট্রান্সফারের সুবিধা নেই সেখানে আপনি US Bank Transfer এর মাধ্যমে পেমেন্ট পেয়ে যাবেন। জনপ্রিয় প্রায় সকল স্টক ইমেজ সাইটেই US Bank Transfer এর সুযোগ দেয়া হয়।
MasterCard পেতে payoneer.com এ গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। কার্ডটি হাতে পাবার আগ পর্যন্ত আপনাকে কোন টাকাই খরচ করতে হবে না। কার্ডে টাকা ট্রান্সফারের পর কার্ডের মূল্য হিসেবে $২৯ কেটে নেয়া হবে। এবং রেজিস্ট্রেশনের পর পুরস্কার হিসেবে দেয়া হবে $২৫। অর্থাৎ আপনার খরচ হবে মাত্র $৪।
রেজিস্ট্রেশনের সময় অবশ্যই সঠিক তথ্য দিতে হবে। আপনি এখনও আয় শুরু করেননি তাতে সমস্যা নেই। কার্ডের জন্য এ্যপ্লাইয়ের সময় প্রমাণ চাইলে আপনার যেকোন স্টক ইমেজ সাইটের প্রোফাইল লিংক দিয়ে দিলেই হবে। তাতে তারা নিশ্চিত হবে যে কার্ডটি আপনার সত্যিই প্রয়োজন।
Skrill
PayPal ফ্রিল্যান্সারদের খুবই কাছের বন্ধু। কিন্তু বাংলাদেশে PayPal সুবিধা নেই। তাই বিকল্প হিসেবে আপনার বন্ধু হতে পারে Skrill. এটি একটি অনলাইন ব্যাংক। এর মাধ্যমে আপনি অনলাইন স্টোরে domain, hosting বা বিভিন্ন premium package কেনাকাটা করতে পারবেন।
জনপ্রিয় সকল স্টক ইমেজ সাইটেই Skrill একাউন্টের মাধ্যমে টাকা তোলার সুযোগ আছে। Skrill এ রেজিস্ট্রেশনের জন্য- www.skrill.com (ক্লিক করুন).
রেজিস্ট্রেশনের সময় অবশ্যই সঠিক তথ্য দিতে হবে। কোন তথ্য ভুল হলে পরে বিপদে পড়তে পারেন। আপনার Skrill একাউন্ট থেকে লোকাল ব্যাংকে টাকা পৌঁছাতে ৩-৭ দিন প্রয়োজন হবে।
প্রয়োজন মনে হলে পড়ে নিতে পারেন-
১৫ টি জনপ্রিয় স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট, যেখানে অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করা যায়
Shutterstock থেকে আয়
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় করার জন্য Shutterstock সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এটি একটি মাইক্রো স্টক ফটো এজেন্সি। Shutterstock এ কন্টেন্টের মূল্য খুব বেশি নয়। কারণ এগুলো কন্ট্রিবিউটর কর্তৃক Non-exclusively বিক্রি হয়।
আগে Shutterstock এ প্রতি ছবি বিক্রিতে ৫০%-৬০% কমিশন দেয়া হতো। তবে এখন এই পরিমাণ ২০%-৩০%। তবে অনলাইনে ছবি বিক্রির ক্ষেত্রে নতুন হলে; Shutterstock আপনার জন্য একটি আদর্শ জায়গা। affiliate program এর মাধ্যমে এখান থেকে এক্সট্রা কিছু টাকাও আয় করা যায়।
Adobe Stock থেকে আয়
স্টক ইমেজের জন্য Adobe Stock খুবই জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। মাত্র ৫ বছরে সাইটটি ১৫০+ মিলিয়ন স্টক ফটো, ১৮ মিলিয়ন ইলাস্ট্রেশন, ৪৭+ মিলিয়ন ভেক্টর, ৩৮ মিলিয়ন অডিও এবং ১৮ মিলিয়ন ভিডিওর সংগ্ৰহ গড়েছে। কাস্টমার ফ্রেন্ডলি সার্ভিস ও কন্ট্রিবিউটরদের বিশেষ কেয়ারের জন্য; এ সাইটটি সকলের কাছেই গ্ৰহণযোগ্যতা পেয়েছে।
Adobe Stock এ আপলোড করা ছবি fotolia.com সাইটেও দেখানো হয়। প্রয়োজনীয় ছবির জন্য প্রতিদিনই প্রচুর ক্লায়েন্ট সাইটটি ভিজিট করে। প্রতি ছবি বিক্রিতে কন্ট্রিবিউটররা ৩৩% কমিশন পেয়ে থাকে। ছবি বিক্রি করে ইনকাম এর জন্য সাইটটি শতভাগ নির্ভরযোগ্য।
Alamy থেকে আয়
হাই কোয়ালিটি ফুটেজের জন্য Alamy খুবই জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট। এটি প্রায় ২০১ মিলিয়ন stock images, vectors, videos এবং 360-degree panoramic image এর একটি বিশাল সংগ্রহ। Alamy স্টক ইমেজ সাইটে ছবি আপলোড করে আয় এর জন্য; প্রথমে সাইটটিতে সাইন আপ করতে হবে।
আপনি ফ্রিতেই এখানে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। এরপর ড্যাশবোর্ডে গিয়ে আপলোড অপশনে ক্লিক করে তিনটি ছবি আপলোড করতে হবে। তিন সপ্তাহের মধ্যে সেগুলো রিভিউ করা হবে। ছবিগুলো সিলেক্ট হয়ে গেলে সেগুলো বিক্রির জন্য সাইটটিতে শো করা হবে।
এখানে আপনি Exclusive এবং Non-exclusive দুভাবেই ছবি বিক্রি করতে পারবেন। প্রতিবার ছবি বিক্রিতে Exclusively ৫০% এবং Non-exclusively ৪০% কমিশন দেয়া হয়। একাউন্টে ৫০ ডলার জমা হলেই আপনি ক্যাশ আউট করতে পারবেন।
Depositphotos থেকে আয়
১০০ মিলিয়ন কনটেন্ট সমৃদ্ধ এই স্টক ইমেজ সাইটটিও ফটোগ্রাফারদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। শুধু ছবি নয় এখানে আপনি Illustrations, Vector Art, Backgrounds, Editorial, News image এবং HD videos ও বিক্রি করতে পারবেন।
প্রতি কনটেন্ট বিক্রিতে আপনাকে ৩৪%-৪২% কমিশন দেয়া হবে। এই কমিশন নির্ভর করবে আপনার পজিশনের উপর। এবং পজিশন নির্ভর করবে আপনার ছবিগুলো কতবার ডাউনলোড হলো তার উপর। এক্ষেত্রে পাঁচ স্তরের ক্যাটাগরি আছে।
Category | downloads |
green | up to 499 |
।bronze | 500 – 4,999 |
silver | 5,000 – 24,999 |
gold | 25,000 – 149,999 |
platinum | 150,000+ |
যত উপরের লেভেলে যাবেন; আপনার কমিশনও তত বাড়বে। এবং সেইসাথে আপনার ফটোগ্ৰাফি করে আয় এর পরিমাণও বেশি হবে।
123RF থেকে আয়
123RF ১১০+ মিলিয়ন কনটেন্ট এবং ৩০০০,০০০ কন্ট্রিবিউটরের একটি নিরাপদ স্টক ফটো ওয়েবসাইট। এখানে আপনি ছবির পাশাপাশি vector illustrations, video clips এবং audio files বিক্রি করতে পারবেন।
একজন কন্ট্রিবিউটর হিসেবে আপনি ৩০%-৬০% পর্যন্ত রেভিনিউ পেতে পারেন।
level | License Points | Subscrip-tion | Credit |
1 | 0-999 | $0.216 | 30% |
2 | 1,000-4,999 | $0.288 | 40% |
3 | 5,000-19,999 | $0.360 | 50% |
4 | 20,000-49,999 | $0.374 | 52% |
5 | 50,000-99,999 | $0.389 | 54% |
6 | 100,000-499,999 | $0.403 | 56% |
7 | 500,000-999,999 | $0.418 | 58% |
8 | 1,000,000+ | $0.432 | 60% |
এই ৮ টি লেভেলের উপর আপনার কমিশন নির্ভর করবে। এবং কন্ট্রিবিউটর লেবেল নির্ধারিত হবে- আপনার শেষ ১২ মাসে অর্জিত License point অনুযায়ী। আপনার পজিশন লেভেল-১ হলে প্রতি ছবি বিক্রিতে আপনাকে ৩০% কমিশন দেয়া হবে। আর যদি ছবিটি এমন কেউ কেনেন যার সাবস্ক্রিপশন প্যাক আছে তার জন্য আপনি পাবেন $০.২১৬।
Dreamstime থেকে আয়
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য Dreamstime খুবই সহায়ক একটি ওয়েবসাইট। সাইটটিতে কনটেন্ট সংখ্যা ১৫২ মিলিয়ন। এবং মোট কন্ট্রিবিউটর সংখ্যা ৬০০০,০০০! এখানে ছবির পাশাপাশি আপনি vectors, audio, video, illustrator, editorial বিক্রি করেও আয় করতে পারবেন।
প্রতি কনটেন্ট বিক্রির জন্য Dreamstime ২৫%-৬০% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে। কমিশনের পরিমাণ নির্ভর করবে: ছবি বিক্রির ধরণ (Exclusive/Non-exclusive) ও ডাউনলোডের সংখ্যার উপর।
Dreamstime এ পুরোপুরিভাবে একজন কন্ট্রিবিউটর হতে হলে; আপনার অন্তত ৫০টি ছবি আপলোডের জন্য এপ্রুভ হতে হবে। একাউন্টে $১০০ জমা হলেই আপনি পেমেন্ট তুলতে পারবেন।
Photocase থেকে আয়
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে আয় এর জন্য Photocase একটি সুপ্রতিষ্ঠিত স্টক ইমেজ সাইট। এখানে আপনি প্রতি ছবি বিক্রিতে ২০%-৫০% পর্যন্ত রেভিনিউ পেতে পারেন। এই কমিশন নির্ভর করে কন্ট্রিবিউটরদের লেভেলের উপর। এবং এই লেভেল নির্ধারিত হয় তাদের পয়েন্ট অনুযায়ী। লেভেলগুলো ক্যাটাগরিতে সাজানো হয় সবজির নামে!
Name | Points | Share |
Leek | 0 | 20% |
Turnip | 50 | 23% |
Onion | 100 | 25% |
Tomato | 500 | 30% |
Pepper | 1,000 | 35% |
Garlic | 5,000 | 40% |
Kürbis | 10,000 | 45% |
Carrot | 50,000 | 50% |
শেষ ১২ মাসের এক্টিভিটির উপর পয়েন্ট হিসেব করা হয়। প্রতি ছবি আপলোডের জন্য ১ পয়েন্ট এবং বিক্রির জন্য ২ পয়েন্ট করে দেয়া হয়।Photocase কিছু কন্ট্রিবিউটকে “Contributor program” এ অংশগ্ৰহণের সুযোগ দেয়। যেখানে তারা নিজেকে-নিজের ছবিগুলোকে; সবার সামনে বিশেষভাবে উপস্থাপন করতে পারে।
Pond5 থেকে আয়
Pond5 হাই কোয়ালিটি footage, music, photography, sound এবং aftereffect এর জন্য একটি আদর্শ জায়গা। এখানে আপনি আপনার ছবির মূল্য নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন। Pond5 কন্ট্রিবিউটরদের ৫০% পর্যন্ত রেভিনিউ দিয়ে থাকে।
500px
ক্রিয়েটিভ কন্টেন্টের জন্য 500px একটি জনপ্রিয় স্টক ইমেজ সাইট। একজন কন্ট্রিবিউটর হিসেবে এখানে আপনি অন্যদের ফলো করতে পারবেন। চাইলে তাদের মার্কেটপ্লেসে নিজের ছবি লিস্টও করতে পারেন।
500px কন্ট্রিবিউটরদের জন্য প্রায়ই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এখানে আপনি প্রতি ছবি non-exclusively বিক্রিতে ৩০%; এবং exclusively বিক্রিতে ৬০% পর্যন্ত আয় করতে পারেন। 500px স্টক ইমেজ সাইটে ছবি বিক্রির প্রক্রিয়াও তেমন জটিল নয়।
SmugMug Pro থেকে আয়
ফটোগ্রাফিতে নতুন হোন বা এক্সপার্ট; SmugMug Pro এ ছবি বিক্রি করে আয় করতে পারেন খুব সহজেই। এখানে আপনি আপনার ছবিগুলোর দাম নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন। SmugMug Pro কন্ট্রিবিউটরদের ৮৫% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে।
পোর্টিফোলিও প্ল্যান কিনে নিলে সাইটটিতে ছবি বিক্রির ভালো সম্ভবনা আছে। তবে সাইন আপের সময় SmugMug Pro তে monthly membership সাবস্ক্রিপশন প্যাক কিনতে হয়। বছরে যার মিনিমাম মূল্য $২০০!
Getty Images থেকে আয়
এটি ২০০ মিলিয়ন কন্টেন্ট সমৃদ্ধ একটি জনপ্রিয় স্টক ইমেজ ওয়েবসাইট। হাই কোয়ালিটি ছবির জন্য প্রতিদিনই প্রচুর ক্লায়েন্ট এখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় ছবি কেনেন। তাই সাইটটিতে আপনার আপলোড করা ছবিগুলো বিক্রির সম্ভাবনা বেশি। এখানে সাইজ অনুযায়ী ছবির দাম নির্ধারিত হয়।
ছোট সাইজের জন্য $১৫০, মাঝারি সাইজের জন্য $৩৫০ ও বড় সাইজের জন্য $৪৯৯। তবে প্রতি ছবি বিক্রিতে আপনাকে মাত্র ২০% কমিশন দেয়া হবে। সে পরিমাণও কিন্তু মোটেও কম নয়। $১৫০ এর ২০%=$৩০ অর্থাৎ ২৫৪২.৫ টাকা!
IStock থেকে আয়
IStock হলো Getty image এর অন্তর্ভুক্ত একটি মাইক্রো স্টক এজেন্সি। এখানেও রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোন সাবস্ক্রিপশন ফি নেই। সাইন আপের পর সাইটটিতে প্রথমে তিনটি ছবি সাবমিট করতে হয়। রিভিউ শেষে ছবিগুলো সিলেক্ট হয়ে গেলে; আপনি নিয়মিত ছবি আপলোডের সুযোগ পাবেন। অন্যান্য স্টক ইমেজ সাইটের মতো এটি খুব বেশি পে করে না।
প্রতি ছবি Non-exclusively বিক্রিতে ১৫% কমিশন দেয়া হয়। এবং Exclusively বিক্রিতে ছবি ডাউনলোডের উপর ভিত্তি করে কিছুটা বেশি কমিশন দেয়া হবে।
Twenty20 থেকে আয়
অন্যান্য স্টক ইমেজ সাইটের তুলনায় Twenty20 কিছুটা ভিন্ন ধাঁচের। Twenty20 কন্ট্রিবিউটরদের ইনস্ট্রাগ্ৰামের মাধ্যমে তাদের ব্র্যান্ড তৈরির সুযোগ দিয়ে থাকে। ওয়েবসাইটটিতে-
- প্রতি ছবি বিক্রির বিপরীতে আপনি ২০% পর্যন্ত কমিশন পেতে পারেন।
- বিভিন্ন চ্যালেঞ্জে অংশগ্ৰহণ করে প্রাইজ হিসেবে কিছু বাড়তি টাকা আয় করতে পারবেন।
- কোন কম্পানি আপনাকে কোন প্রজেক্টে নিযুক্ত করলে (ফটোশুটের জন্য); ছবি বিক্রির ১০০% রেভিনিউই হবে আপনার!
Pixieset থেকে আয়
এখানে ছবি বিক্রির জন্য আপনি একটি অনলাইন স্টোর তৈরি করতে পারবেন। এবং এই স্টোরের উপর আপনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে। স্টোরের ছবিগুলোর দাম আপনি নিজেই নির্ধারণ করতে পারবেন।
ফ্রি প্ল্যানের জন্য Pixieset প্রতি ছবি বিক্রিতে ৮% কমিশন নেবে। অর্থাৎ আপনি পাচ্ছেন ৯২%! এবং পেইড প্ল্যানের জন্য ছবি বিক্রির ১০০% কমিশনই হবে আপনার!
Foap থেকে আয়
Foap কমিউনিটির সক্রিয় মেম্বার সংখ্যা তিন মিলিয়ন। এখানে প্রতি ছবির জন্য আপনাকে $৫ করে দেয়া হবে। বিভিন্ন মিশনের জন্য আপনি $১০০-$২৫০০ পর্যন্ত আয় করতে পারেন। এসব মিশনে বিভিন্ন ব্র্যান্ড, ফটোগ্ৰাফি প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এবং প্রাইজ হিসেবে থাকে প্রচুর নগদ অর্থাৎ আপনি যদি নিজের তোলা ছবিগুলো Nivea, Heineken এর মতো বিভিন্ন ব্র্যান্ডের উপর দেখতে চান; তবে Foap আপনার জন্য একটি আদর্শ প্লাটফর্ম।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করে ইনকাম খুব একটা সহজ নয়। আবার খুব বেশি কঠিনও নয়। তাই দেরি না করে এখন থেকেই কাজে লেগে পড়ুন।
FAQ (Frequently Asked Questions)
১) স্টক ফটোগ্রাফি কী?
বিভিন্ন কাজের জন্য (যেমন: বিজ্ঞাপন, ব্লগিং) যেসব ছবি ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়; বা যেসব ছবি কমার্শিয়াল/নন-কমার্শিয়াল ব্যবহারের জন্যই তোলা হয় সেগুলো হলো স্টক ফটোগ্ৰাফ। এবং এ উদ্দেশ্যে যে ফটোগ্ৰাফি করা হয় সেটাই স্টক ফটোগ্ৰাফি।
২) একই ছবি একাধিক ওয়েবসাইটে বিক্রির জন্য আপলোড করা যাবে কি?
হ্যাঁ। ছবি Non-exclusively বিক্রি করলে একই ছবি আপনি ২/৩ ওয়েবসাইটে আপলোড করতে পারবেন।
৩) কীভাবে মোবাইলে (Smartphone) তোলা ছবি অনলাইনে বিক্রি করতে পারব?
ছবি DSLR ক্যারেয়ায় তোলা হয়েছে নাকি হাতে থাকা স্মার্টফোনে এটা কোন ফ্যাক্ট না। ছবির কোয়ালিটিই এখানে আসল। আপনি সেগুলো নিজস্ব ওয়েবসাইটে বা স্টক ইমেজ সাইটে আপলোড করে সহজেই বিক্রি করতে পারবেন।
৪) অনলাইনে ছবি বিক্রি করার সবেচেয়ে ভালো উপায় কী?
অন্তত ৫-৭ টি স্টক ইমেজ সাইটে ছবি আপলোড করা। কারণ তখন আপনার ছবিগুলো বিক্রি হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা তৈরি হবে।
৫) ফটোগ্রাফি করে কত টাকা ইনকাম করা যায়?
এক্ষেত্রে অফলাইনে আপনি একটি ভালো বেতনের চাকরি পেতে পারেন। আবার অনলাইনে ছবি বিক্রি করে মাসে কয়েকশ ডলার আয় করাটাও কঠিন হবে না।
৬) আমি কীভাবে ফটোগ্রাফি শুরু করব?
একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে ফটো জার্নালিজম, ডকুমেন্ট্রি ফটোগ্রাফি, ওয়াইল্ডলাইফ , প্রোডাক্ট, ওয়েডিং বা ইভেন্ট ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনি বাস্তব জীবনে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করতে পারেন। এছাড়া ভার্চুয়াল জগতেও আপনি স্টক ইমেজ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফটোগ্ৰাফি ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
প্রয়োজন মনে হলে পড়ে নিতে পারেন –
অসাধারণ একটা পোস্ট! খুব উপকৃত হলাম!
অনেক ধন্যবাদ!