ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার ৫টি নিশ্চিত উপায়

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার ৫টি নিশ্চিত উপায়

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে ইচ্ছুক? আপনি কি জানেন, ২০২৪ সালে বর্তমান বিশ্বের প্রচুর সংখ্যক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রচুর টাকা আয় করছেন।

তবে আসুন, আর কথা না বাড়িয়ে এক নজরে দেখে নিই-

কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করা যায়?

একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইনে আয় করার জন্য আপনার প্রথমত তিনটি জিনিস প্রয়োজন।

১। ডোমেইন
২। ওয়েব হোস্টিং
৩। কন্টেন্ট পাবলিশিং প্লাটফর্ম (উদাহরণ স্বরূপ- ওয়ার্ডপ্রেস)।

আপনি ইচ্ছে করলে ব্লগার.কম থেকে ফ্রি হোস্টিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। গুগলের ফ্রি সাবডোমেইন সেবা তথা ব্লগস্পট.কম এর অংশ হয়ে (উদাহরণ স্বরুপ: wplifetips.blogspot.com – এখানে “wplifetips” আপনার নির্বাচিত সাবডোমেইন এবং “.blogspot.com” গুগলের ব্লগস্পট.কম এর মাধ্যমে পরিচালিত ফ্রি ডোমেইন সার্ভিস) তাদের সহজে ব্যবহারযোগ্য ওয়েব পাবলিশিং প্লাটফর্ম ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একটি মানসম্মত ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে পারবেন।

আসুন, এবার জেনে নেই কিভাবে উপরে উল্লেখিত নিয়মে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইনে আয় করা যায়?

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করার নিশ্চিত উপায়


১। ওয়েবসাইটে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাড যুক্ত করে আয়

আপনি ইচ্ছে করলে গুগল অ্যাডসেন্স এর সাথে যুক্ত করে খুব সহজেই একটি তথ্যবহুল ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে পারবেন। এর জন্য প্রথমত আপনাকে অ্যাডসেন্স এর সকল নিয়ম মেনে আপনার ওয়েবসাইটটি সাজাতে হবে।

এরপর তাতে নিয়মিত ভালো মানের কিছু আর্টিকেল প্রকাশ করতে হবে। এভাবে নিয়মিত নূন্যতম ৩০টির মত আর্টিকেল প্রকাশ করতে সক্ষম হলে আপনার ওয়েবসাইটটিকে গুগল অ্যাডসেন্স পাবলিশার হিসেবে মনোনিত করার জন্য নিশ্চিন্তে আবেদন করতে পারবেন।

এখানে উল্লেখ্য যে, গুগলের ফ্রি ব্লগস্পট সার্ভিস ব্যবহার করে গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করে এপ্রুভাল পাওয়াটা একটু কঠিন। তবে আপনি যদি সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে নিয়মিত আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারেন তবে ওয়েবসাইটের বয়স নূন্যতম ৬ মাস হলেই গুগল অ্যাডসেন্স এর পাবলিশার হিসেবে মনোনিত হবার ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ যোগ্য বলে ধরা যায়।

বলা বাহুল্য, এই প্রক্রিয়ায় বহু সংখ্যক ফ্রি ওয়েবসাইট নির্মাতা গুগল অ্যাডসেন্স এর এপ্রুভালও পেয়েছেন বটে।

আপনি অ্যাডসেন্স পাবলিশার হিসেবে মনোনিত হলে অ্যাডসেন্স কতৃপক্ষ থেকে দেয়া একটি কোড আপনার ওয়েবসাইটে বসিয়ে নিলেই কিছু সময়ের মধ্যে গুগল অ্যাডসেন্স এর অ্যাডস আপনার সাইটে প্রদর্শিত হতে থাকবে।

গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে কিভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করা যায়?

অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করার পুরো প্রক্রিয়াটা নির্ভর করে আপনার ওয়েবসাইটে আসা ভিজিটরদের উপর। আপনার সাইটে যত বেশি সংখ্যক ভিজিটর আসবে, তাদের একটি নির্দিষ্ট অংশ অ্যাডসেন্স এর অ্যাডসমূহে ক্লিক করলে সেই অ্যাড এর সিপিসি অনুযায়ী আপনার অ্যাকাউন্টি একটি নির্দিষ্ট হারে টাকা জমা হতে থাকবে।

২। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

আপনি ইচ্ছে করলে কোন প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হয়ে তাদের উৎপাদিত বা পরিবেশিত পণ্য বা সেবার ব্যানার বা টেক্সট ভিত্তিক বিজ্ঞাপন আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করে আয় করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে আপনার সাইটের ভিজিটররা যদি আপনার ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে বিজ্ঞাপন দাতার সাইটে গিয়ে তা ক্রয় করেন তবে আপনি তা থেকে কিছু অংশ কমিশন বা টাকা পাবেন।

বর্তমান বিশ্বে এই ব্যবস্থায় প্রচুর সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনলাইন থেকে প্রচুর টাকা উপার্জন করছেন। উদাহরণস্বরুপ বলা যায়- অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের কথা।

৩। ইবুক বিক্রি করে আয়

বিভিন্ন তথ্য সমৃদ্ধ অথবা শিক্ষমূলক ইবুক তৈরি করে তা আপনার ওয়েবসাইটে বিক্রির ব্যবস্থা করেও অনলাইনে আয় করা সম্ভব। বর্তমান বিশ্বে প্রচুর সংখ্যক ব্লগার, ইন্টারনেট মার্কেটার নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ইবুক তৈরি করে ওয়েবসাইটের একটি আকর্ষণীয় অংশে (যেমন- সাইটবার, আর্টিকেলের শুরুতে বা মাঝামাঝি অংশে) বিক্রির জন্য প্রদর্শন করে প্রচুর টাকা আয় করছেন।

আপনিও ইচ্ছে করলে তাদের পথ অনুসরণ করে আপনার ওয়েবসাইটে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ইবুক তৈরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারেন।

ধরে নিন- আপনি এসইও সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানেন। আপনার ওয়েবসাইটে এসইও সম্পর্কিত বেশ কিছু লেখাও ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে (উদাহরণস্বরুপ- nshamim.com)। এক্ষেত্রে আপনি একটু কষ্ট করে সেই লেখাগুলো শ্রেণীবদ্ধ টিউটোরিয়াল আকারে ইবুক হিসেবে তৈরি করে তা ওয়েবসাইটে বিক্রির ব্যবস্থা করে প্রচুর টাকা খুব সহজেই আয় করে নিতে পারবেন।

৪। বিভিন্ন পণ্য সামগ্রি বা মূল্য সংযোজিত সেবা বিক্রি করে আয়

আপনি ইচ্ছে করলে আপনার ওয়েবসাইটে সরাসরি বিভিন্ন পণ্য বা মূল্য সংযোজিত সেবা বিক্রি করেও আয় করতে পারবেন। বর্তমানে অনেকেই ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে অনলাইনে আয় করার দিকে ঝুকছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দারাজ, ইভ্যালি প্রভৃতি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে পারে।

৫। ওয়েবসাইটকে পোর্টফোলিও সাইট হিসেবে ব্যবহার করে আয়

একটি ওয়েবসাইটকে পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট হিসেবে ব্যবহার করেও আয় করা সম্ভব। ধরুন- আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কাজ খুঁজছেন। এক্ষেত্রে আপনি যোগ্যতার প্রমাণস্বরূপ আপনার কাজের কিছু নমুনা আপনার ওয়েবসাইটে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে নিয়োগকর্তাকে আকৃষ্ট করতে পারবেন।

যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস এর প্রোফাইল পেজের চাইতে আপনার ওয়েবসাইটে কাজের দক্ষতা বিস্তৃতভাবে প্রকাশের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে, সে কারণে প্রচুর সংখ্যক ফ্রিল্যান্সার বর্তমানে নিজেকে ও নিজের কর্মদ্ক্ষতার প্রমাণ দিতে ওয়েবসাইট তৈরির দিকে মনোযোগী হয়েছেন।

এছাড়া আপনার পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটটি আপনাকে দেশীয় গ্রাহক তৈরিতে অথবা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে আপনার সেবা সমূহের ক্রেতা খুঁজতে ও তাদের মাধ্যমে ব্যবসার প্রচার ও প্রসার ঘটাতেও যথেষ্ট কাজে আসবে।

প্রয়োজন মনে হলে পড়ে দেখতে পারেন-