যৌন দূর্বলতা চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রধান ৫টি হোমিওপ্যাথি ওষুধ

হোমিওপ্যাথি মতে যৌন দূর্বলতা বা যৌন কাজে অক্ষমতার কার্যকর চিকিৎসা সম্ভব। তবে অন্যান্য অসুস্থতা চিকিৎসার মতো যৌন দূর্বলতা চিকিৎসার্থেও অবশ্যই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার প্রধান নীতিগুলোর সঠিকভাবে অনুসরণ করা প্রয়োজন।

সর্বাঙ্গীন লক্ষণ সমষ্টি অর্থাৎ যৌন দূর্বলতার লক্ষণ সমূহের পাশাপাশি অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ সমূহ বিচার বিশ্লেষণ করে সেইমত সমলক্ষণ মতে ঔষধ নির্বাচন করে প্রয়োগ করা সম্ভব হলে যৌন দূর্বলতা তথা যৌন অক্ষমতা, দ্রুত বীর্যপাত, অবাঞ্চিত শুক্রক্ষরণ প্রভৃতি সমস্যার স্থায়ী চিকিৎসা করা যায়।

দ্রুত বীর্যপাত ও ইরেকটাইল ডিসফাংশন চিকিৎসা’য় সেলেনিয়াম এর কার্যকারিতা

সেলেনিয়ামের দুর্বলতা যেমন পুরুষের জননাঙ্গে প্রকাশ পায় তেমনি সর্বাঙ্গেও প্রকাশ পায়। লিঙ্গের উত্থান ধীরে ধীরে হয় এবং তা সবল থাকে না অর্থাৎ রোগীর লিঙ্গের উত্থান শক্তিহীনতা নামক অসুস্থতা সৃষ্টি হয়।

সঙ্গমকালে অতিশীঘ্রই রেতঃস্থলন হয়। তারপর রোগী বদমেজাজি হয়ে পড়ে। সঙ্গম ইচ্ছা প্রবল থাকে কিন্তু শারীরিক শক্তি থাকে না। সে ধ্বজভঙ্গ রোগী হয়ে পড়ে।

সপ্তাহে দুই তিন বার স্বপ্নদোষ হয়। তারপর বিছানা থেকে উঠে পিঠের দুর্বলতা ও পঙ্গুতা জন্মে।

বসে থাকলে, ঘুমের মধ্যে, চলবার সময় বা পায়খানায় বসলে প্রস্ট্রেটিক রস বিন্দু বিন্দু বের হয়। তবে যদি দুর্বলতা দীর্ঘকাল স্থায়ী থাকে তাহলে রোগীর শীর্ণতা জন্মে। বিশেষ করে মুখমণ্ডল, হাত দুটি ও হাঁটু দুটি বিশেষভাবে শীর্ণ হয়ে পড়ে। এটাই সেলেনিয়াম এর যৌন দূর্বলতা সূচক অবসন্নতার চিত্র।

যৌন দূর্বলতা ও সন্তান জন্মদানে অক্ষমতার চিকিৎসায় কোনিয়াম এর ব্যবহার

এতে পুরুষের জননাঙ্গের খুব দুর্বলতা থাকে। রোগীর দারুন কাম-প্রবৃত্তি ও কাম-চিন্তা থাকে বটে, কিন্তু সে যৌন মিলনে অক্ষম হয়ে পড়ে। নারীদের দেখলে কিংবা তাদের বিষয় ভাবলে শুক্রপাত হয়। পুরুষাঙ্গ যথেষ্ট শক্ত বা দৃঢ় হয়না। অল্প কিছুক্ষণ শক্ত বা উত্থিত থাকে এবং ঠিক সংঙ্গম শুরুর সময়ে অর্থাৎ সংসর্গকালে শিথিল হয়ে পড়ে।

এতে রোগীর দুর্বলতা ও মর্মান্তিক মনোকষ্ট দেখা দেয়। বিশেষ করে এতে রোগীর মন আক্রান্ত হয় ও খুব উৎকট রকমের অবসাদ বায়ু (হাইপোকন্ড্রিয়াসিস) রোগ জন্মে। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ের মনেই এরকম অবস্থা ঘটতে পারে।

বিশেষ করে অতিরিক্ত বা খুব কম ইন্দ্রিয় সেবা বা অতি ইন্দ্রিয় সংযমের ফলেও এই অবসাদ বায়ু রোগ জন্মাতে দেখা যায়। এজন্যই কোনিয়াম অবিবাহিতা বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের পক্ষে একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ।

সঠিক নিয়মে শক্তিকৃত কোনিয়াম গ্রহণ করলে পুরুষের শুক্রাণুর দোষ-ত্রুটি দূর হয়। বীর্য ঘন হয়। পুরুষের জনন ক্ষমতা অর্থাৎ সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

অর্থাৎ শুক্রাণুর ত্রুটির কারনে যাদের সন্তান হয়না, তাদের লক্ষণ অনুযায়ী কোনিয়াম ব্যবহারে সন্তান জন্মদানের জন্য প্রয়োজনীয় শুক্রাণুর গঠনগত ত্রুটির চিকিৎসা হয়।

প্রয়োজনীয় সংখ্যক শুক্রাণু স্বাভাবিক ভাবেই তৈরি হতে থাকে এবং সেই শুক্রাণুর মধ্যে ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার মত শক্তি সামর্থ্য বিদ্যমান থাকে।

ধ্বজভঙ্গ বা পুরুষত্বহীনতা রোগের সেরা ওষুধ লাইকোপোডিয়াম

পরিনত বয়স্ক ব্যক্তি বা বৃদ্ধ ও দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার বিয়ে করে রতিশক্তির অভাব অনুভব করলে একমাত্র লাইকোপোডিয়ামই তার শক্তি, সামর্থ্য বৃদ্ধি করার একমাত্র ওষুধ।

তাছাড়া এই অবস্থায় পরিবারের মধ্যে যে বিভ্রাট ঘটে থাকে তা একমাত্র লাইকোপোডিয়াম সঠিক নিয়মে গ্রহণের মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।

যুবকেরা স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক উপায়ে অতিরিক্ত ইন্দ্রিয় সেবার জন্য পুরুষত্বহীন হয়ে পড়লে, লিঙ্গ ক্ষুদ্র, শীতল ও শিথিল হলে কিন্তু প্রথম যৌবনের মতোই প্রবৃত্তি প্রবল থাকলে বা তা অপেক্ষা আরো বেশী মনে হলে কিন্তু যৌনকর্মে অক্ষম হলে লাইকোপোডিয়াম উপযোগী।

জৈব পদার্থ অপচয়ে সৃষ্ট যৌন দূর্বলতা চিকিৎসায় এসিড ফস এর কার্যকারিতা

হস্তমৈথুন ও শুক্রস্রাবে যে অপচয় হয় তাতে চায়না প্রথম সারির একটি ওষুধ। তবে এর জন্য স্নায়ু মণ্ডলের অপকার হলে ফসফরিক এসিড বা এসিড ফস উপকারী।

যেমন শুক্র উৎপন্ন হবার পূর্বে বা অধিক শুক্র উৎপন্ন হতে না হতেই যে সকল অল্প বয়স্ক তরুন হস্তমৈথুন এর দোষে অস্বাভাবিক উত্তেজনায় কষ্ট পায় তাদের পক্ষে ফসফরিক এসিডই উপযোগী, চায়না নয়।

তবে স্বপ্নদোষ, অনিয়মিত হস্তমৈথুন, স্বাভাবিক বীর্যপাত, অসুস্থতা বা আঘাত জনিত রক্তপাত হলে এবং তার জন্য যৌন দূর্বলতা দেখা দিলে অর্থাৎ অল্প সময় ব্যাপী শরীরের জৈব তরল পদার্থের অপচয়ে যে দুর্বলতা দেখা দেয় তার চিকিৎসার্থে চায়না কার্যকরী।

হস্তমৈথুনের কুফল প্রতিকারের শ্রেষ্ঠ ওষুধ ষ্ট্যাফিসাগ্রিয়া

কখনো কখনো হস্তমৈথুনের কুফলের জন্য সৃষ্ট লক্ষণ চিকিৎসায় ষ্ট্যাফিসাগ্রিয়া প্রয়োজন হয়। তবে তখনো মাঝে মাঝে ফসফরিক এসিডকে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

ষ্ট্যাফিসাগ্রিয়ার রোগী অবিরত রতিবিষয়ক প্রসঙ্গে আলোচনা করে। সর্বদা সঙ্গমসুখ সম্বন্ধে বা কাম বিষয়ক চিন্তা করে।

শুক্রমেহ, পরিনাম স্বরুপ মুখমণ্ডল বসে যায়। রোগীর চোখের চাহনিতে দোষী এবং লাজুকের মতো দৃষ্টি দেখা যায়।

শুক্রপাতের পর পিঠে ব্যথা হয়। দুর্বলতা, অবসন্নতা, জননেন্দ্রিয়ের শিথিলতা ও শুষ্কতা দেখা যায়। এই ধরনের লক্ষণ সাদৃশ্যে ষ্ট্যাফিসাগ্রিয়া ব্যবহার করে সফলভাবে যৌন দূর্বলতার চিকিৎসা করা যায়।

যৌন দূর্বলতা চিকিৎসা বিষয়ক প্রাসঙ্গিক লেখা-

Leave a Comment