শিশুদের ঘুংড়ি বা ক্রুপ কাশির হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

স্বরযন্ত্র অর্থাৎ ল্যারিংস বা শ্বাসযন্ত্রের উর্ধ্বভাগ ও শ্বাসযন্ত্রের (Trachea) প্রদাহ সহ শ্বাসকষ্ট, দমবন্ধ করা কাশি প্রভৃতি উপসর্গের উপস্থিতি এবং কখনও বা শ্বাসনালীতে কৃত্রিম ঝিল্লি উৎপন্ন হবার নাম ঘুংড়ি বা ক্রুপ (Croup) কাশি।

ঘুংড়ি দুই প্রকার-

(ক) কৃত্রিম ও (খ) প্রকৃত।

শিশুদের ক্রুপ (Croup) কাশির সেরা হোমিও ওষুধ
শিশুদের ক্রুপ (Croup) কাশির সেরা হোমিও ওষুধ

কৃত্রিম ঘুংড়ি শিশুদের হঠাৎ আক্রমণ করে। দেখা যায়- শিশু হয়তো ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ গলা সুড়সুড় করে ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখন শ্বাস প্রশ্বাসে এক প্রকার সাঁই সাঁই শব্দ হয়ে ক্রমে গলা ঘড়ঘড় করতে থাকে। এই ঘুংড়ি অতি আশঙ্কাজনক।

প্রকৃত ঘুংড়িতে প্রথমে খুসখুসে কাশি হয়ে পরে আক্ষেপিক শুকনো কাশি হতে থাকে। তখন বার বার কাশতে কাশতে গলা ভেঙ্গে যায় এবং গলায় ব্যথা হয়। গা গরম হয়ে পীড়ার পূর্ণ বিকাশ হয়।

শিশুদের ক্রুপ (Croup) কাশির সেরা হোমিও ওষুধ

কৃত্রিম ও প্রকৃত ঘুংড়ি বা ক্রুপ কাশিতে স্বরভঙ্গ সহ কাশি, কাশতে কাশতে দম আটকানো ভাব, শরীরের উপরিভাগ তথা চর্ম শুকনো, অস্থিরতা, জ্বর, প্রবল তৃষ্ণা প্রভৃতি লক্ষণে- অ্যাকোনাইট ৩x দশ মিনিট পর পর খেতে দিতে হবে।

অ্যাকোনাইট খাওয়াতে কিছুটা উপশম হলে- কাশতে কাশতে শ্বাস বন্ধ হয়ে মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে, কাশির সময় সাঁই সাঁই শব্দ ও গলার স্বর ভেঙ্গে গেলে স্পঞ্জিয়া ৩x দশ থেকে পনের মিনিট পর পর প্রযোজ্য। এই প্রকার লক্ষণ যুক্ত কৃত্রিম ঘুংড়িতে ওষুধটি খুব ভালো কাজ করে।

অ্যাকোন ও স্পঞ্জিয়া খাওয়ার পর জ্বর না কমে কাশি কিছুটা সরল হলে হিপার সালফ ৬ এবং আক্ষেপিক কাশি হলে স্যাম্বুকাস ৩x উপকারী। বিশেষ করে রাতে হঠাৎ করে ঘুম ভেঙ্গে শ্বাসরোধের মতো অবস্থা হলে উপযোগী হবে।

শ্বাসনালীতে কৃত্রিম ঝিল্লি পুরু হয়ে শ্বাসকষ্ট হলে ব্রোমাইন ৩x প্রতি পনের মিনিট পর পর প্রযোজ্য।

শিশুর গলা প্রলম্বিত ও মাথা পিছন দিকে বাঁকা হয়ে পড়লে এবং খাবি খাওয়া লক্ষণে অ্যান্টিম টার্ট ৬ ভালো কাজ করে।

শুকনো ও কর্কশ কাশি, মুখ থমথমে, চোখ রক্ত বর্ণ, নাড়ি পূর্ণ ও কঠিন লক্ষণে বেলাডোনা ৩ খাওয়াতে হবে।

স্বরলোপ, বেদনা, রোগ আক্রমণের অনেক পরে কফ নিঃসরণ প্রভৃতি লক্ষণে ফসফরাস ৬ খাওয়ানো যেতে পারে। তবে খুব অল্প মাত্রায় (সর্বোচ্চ ২-৩ বার) প্রযোজ্য।

কাশি, বুকে ব্যথা বা টাটানি, স্বরভঙ্গ বা গলার কণ্ঠস্বর বসে যাওয়া প্রভৃতি লক্ষণে- কষ্টিকাম ৩০।

স্বরযন্ত্রের ব্যথা, বিরক্তিকর শুকনো কাশি, কাশির সময় গলায় হাত দিয়ে চেপে ধরা, শ্বাসকষ্ট, গলা সাঁই সাঁই করা লক্ষণে আয়োডিন ৩০ সুন্দর কাজ করে।

বায়োকেমিক মতে ক্রুপ কাশির হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

ডাঃ সান্ডার বলেন যে, ক্যাল্কেরিয়া ফস ১২x আধাঘণ্টা পর পর খাওয়ালে প্রকৃত ঘুংড়ি বা ক্রুপ কাশি এবং ফেরাম ফস ১২x এবং কেলি মিউর ১২x পর্যায়ক্রমে খেতে দিলে কৃত্রিম ঘুংড়ি রোগ ভালো হয়।

Ref: Sannder’s Biochemic Medicines.

আরও পড়ুন-

শিশুদের সর্দি-কাশির সেরা হোমিও ওষুধ

Leave a Comment