ছেলে হোক বা মেয়ে, পিম্পলের যন্ত্রণা থেকে রেহাই পায় না কেউই। তবে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাহলে দেরি না করে জেনে নিন, পিম্পল দূর করার উপায় নিয়ে সাজানো সহজ কিছু টিপস।
পিম্পল কেন হয়?
পিম্পল/ব্রণের কারণ একটি বা দুটি নয়। আবার এই কারণগুলো সবার ক্ষেত্রে একও নয়। আর সেজন্য এর সমাধানও হতে হবে ভিন্ন। তাই পিম্পল দূর করার উপায় জানার আগে, আমাদের তার কারণগুলো জানা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত ধুলো-ময়লা
ত্বকে অতিরিক্ত ধুলো-ময়লা জমে সেবেসিয়াস গ্ৰন্থির মুখ আটকে ব্রণের সৃষ্টি হয়। সেবেসিয়াস হলো ত্বকের এক ধরণের তেল গ্ৰন্থি যা থেকে তেল নিঃসরণ হয়। এটি আমাদের ত্বককে নরম রাখে; প্রাকৃতিক ময়েশ্চরাইজার হিসেবে কাজ করে।
বাইরে বের হলে আমাদের ত্বককে প্রচুর ধুলো, ময়লার সম্মুখীন হতে হয়। নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়া না হলে এসব দূষণ-টক্সিন ত্বকে আঁটকে যায়, ফলে ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং জন্ম হয় ব্রণ (pimple) এর।
হরমোনের অসামঞ্জস্যতা
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে মেয়ে উভয়েরই হরমোন নিঃসরণে কমবেশি তারতম্য ঘটে। এর প্রভাব রক্তের পাশাপাশি পড়ে ত্বকেও। এজন্যই টিন এজারদের ( ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের) ত্বকে পিম্পলের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়।
ব্রণ খুঁটানো
অনেকে পিম্পলের হাত থেকে বাঁচতে তা খুঁটিয়ে ফেলেন। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। পিম্পল দূর হওয়ার পরিবর্তে বেড়ে যায়; এমনকি দীর্ঘমেয়াদি কোন দাগও পড়ে যেতে পারে! ইতোমধ্যেই যদি আপনি মুখের দাগের সমস্যায় পড়ে গিয়ে থাকেন তবে-
অবশ্যই পড়ুন –
অতিরিক্ত ঘাম
অতিরিক্ত ঘামের ফলেও হতে পারে পিম্পল। যাদের নিয়মিত ওয়ার্ক আউট করতে বা রোদে বেড়োতে হয়, অতিরিক্ত ঘামের ফলে তাদের ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণও হয় বেশি। যার ফলে দেখা দেয় ব্রণ/পিম্পল।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা
অতিরিক্ত টেনশন থেকে শুধু হেয়ারফল নয়, হতে পারে পিম্পলও! যারা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করেন তাদের অধিকাংশই ব্রণের সমস্যায় ভোগেন।
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
যারা অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন বা ঘুমে পর্যাপ্ত সময় ব্যয় করেন না; তাদেরও পিম্পলের যন্ত্রণায় ভুগতে দেখা যায়। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে দেহে হরমোনের ভারসাম্যে তারতম্য ঘটে। এছাড়া রক্ত সঞ্চালনেও সমস্যা হয়। যার প্রভাব পড়ে ত্বকে এবং দেখা দেয় পিম্পল।
অতিরিক্ত জাঙ্কফুড
অতিরিক্ত তেল বা মসলাযুক্ত খাবার (যেমন: সিঙারা, সমুচা, পকোড়া) পিম্পলের জন্য দায়ী। এছাড়া অতিরিক্ত মিষ্টি, চকলেট বা কোল্ড ড্রিংসও ব্রণের জন্ম দিতে পারে।
সঠিক মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহার না করা
ত্বকের ধরণ অনুযায়ী সঠিক মেকআপ প্রোডাক্ট বেছে না নিলে তা থেকে ব্রণের সৃষ্টি হতে পারে। হেভি ক্যামিকেলযুক্ত মেকআপ প্রোডাক্ট ব্যবহারে শুধু ব্রণ নয় ত্বকের অন্যান্য মারাত্মক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
মেকআপ রিমুভ না করা
অনেকে দিন শেষে মেকআপ তুলতে আলসেমি করেন। দীর্ঘসময় ধরে ত্বকে মেকআপ লেগে থাকলে ত্বকের বিভিন্ন গ্ৰন্থি বন্ধ হয়ে ব্রণের সৃষ্টি হয়। মেকআপ বলতে শুধু ফাউন্ডেশন, প্রাইমারকে নয় ; সাধারণ পাউডারকেও বোঝায়। তাই সামান্য পাউডার ব্যবহারেও দিনশেষে তা রিমুভ করতে ভুলবেন না।
পিম্পল প্রতিরোধে ১৫ টি বেসিক টিপস
- দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
- ডেইলি স্কিন কেয়ার রুটিন মেইনটেইনে আলসেমি নয়।
- বাইরে থেকে এসে প্রতিবার মুখ ক্লিঞ্জিং, টোনিং ও ময়েশ্চরাইজিং করে নিন।
- সপ্তাহে দুদিন ফেস স্ক্রাব করুন। এক্ষেত্রে আপনি চালের গুঁড়া ও দুধ মিশিয়ে স্ক্রাবার বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ২ মিনিট ত্বকে স্ক্রাব করে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
- ব্রণ হলে তা খোঁচাখুঁচি করবেন না।
- মুখে ঘন ঘন হাত লাগাবেন না। পারলে হাতের সংস্পর্শ পুরোপুরি এড়িয়ে চলুন।
- বালিশের কভার ও মুখ মোছার তোয়ালে সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
- চুলে তেল দিয়ে থাকলে খেয়াল রাখুন তা যেন মুখের ত্বকে না লাগে।
- সবসময় দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
- দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা সময় ঘুমিয়ে নিন। রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ করুন।
- অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার, মিষ্টি, কোল্ড ড্রিংস ও চকলেট এড়িয়ে চলুন।
- বেশি বেশি ফল ও শাক-সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- সবসময় ব্যবহারের জন্য এমন কোন ক্রিম সিলেক্ট করবেন না যা ত্বককে তেল চিটচিটে করে তোলে।
- সালফেটস, প্যারাবেন্স সমৃদ্ধ মেকআপ প্রোডাক্ট ট্রেন্ড হলেও এগুলো এড়িয়ে চলুন। মেকআপ প্রোডাক্ট কেনার সময় যাচাই করে নিন তাতে কোন ক্ষতিকর ক্যামিকেল আছে কি না।
- দিনশেষে মেকআপ রিমুভার দিয়ে মেকআপ তুলে ক্লিঞ্জিং, টোনিং ও ময়েশ্চরাইজিং (স্কিন কেয়ার) করে নিন।
পিম্পল দূর করার উপায়
লেবু
এক টুকরো তুলোয় সামান্য লেবুর রস নিয়ে পিম্পলের উপর সারারাত রেখে দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণ শুকিয়ে নিজে থেকে ঝরে পড়বে।
শশা
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে শশার জুড়ি মেলা ভার। এতে আছে ভিটামিন এ, ডি, ই যা ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। শশা থেঁতো করে ব্রণের উপর বা সারা মুখে লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
আদা
আদা পাতলা করে কেটে একনে বা পিম্পলের উপর হালকা করে ঘষতে থাকুন। ১০-১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে সামান্য জ্বালাপোড়া হতে পারে। এতে ভয় পাবার কিছু নেই। পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে এটি দ্রুত কাজ করে।
রসুন
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন রসুনও। ১-২ টি রসুন দুই টুকরো করে কেটে ব্রণে লাগান। ৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি ব্যবহারে সকালে উঠেই ত্বকের উন্নতি বুঝতে পারবেন।
অ্যালোভেরা
সামান্য অ্যালোভেরা বা অ্যালোভেরা জেল নিয়ে ব্রণের উপর ২০ মিনিট বা সারারাত লাগিয়ে রাখুন। পরে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে দারুণ কাজে দেয়।
বরফ
এক টুকরো বরফ একটি পরিষ্কার পাতলা সুতি কাপড়ে পেঁচিয়ে কিছুক্ষণ পিম্পলের উপর রেখে দিন। এবার একটু বিরতি নিয়ে বরফ টুকরো আবারও পিম্পলে লাগান। এভাবে কয়েকবার ব্যবহারে পিম্পলের লালচে ভাব দূর হয়ে এর দগদগে ভাবও কমে আসবে। বরফ শুধু পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবেই নয়, নিয়মিত ব্যবহারে পিম্পল প্রতিরোধের উপায় হিসেবেও কাজ করে।
গ্ৰিন টি
৩-৪ ফোটা গ্ৰিন টি লিকার ছোট এক টুকরো তুলোয় নিয়ে ব্রণের উপর রেখে দিন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া গ্ৰিন টি ব্যাগও ব্যবহার করতে পারেন। এটিও পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ভালো কাজ করে।
নিমপাতা
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে নিমপাতা যে কতটুকু উপকারী তা কমবেশি সবারই জানা। ৪-৫ টি নিমপাতা বেটে পেস্ট করে ব্রণে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে পিম্পল দূর হতে বাধ্য।
তুলসি পাতা
৪-৫ টি তুলসি পাতা নিয়ে তা থেকে রস বের করে ব্রণে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে বেশ অনেকটা কার্যকরী।
পুদিনা পাতা
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন পুদিনা পাতাও। কয়েকটি পুদিনা পাতা বেটে বা রস বের করে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে রাখুন। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
পেঁপে
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে পাকা পেঁপে বেশ ভালো কাজ করে। একটি পাকা পেঁপে চটকে পেস্ট করে মুখের ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
কলা
১ টুকরো পাকা কলা চটকে পেস্ট করে ব্রণের ওপর লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বেকিং সোডা
সামান্য বেকিং সোডার সাথে লেবুর রস বা পানি মিশিয়ে ব্রণে লাগিয়ে নিন। সোডা শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটিও পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ভালো। তবে মনে রাখবেন এটি যেন মুখের অন্যান্য জায়গায় না লাগে।
টুথপেস্ট
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন টুথপেস্টও। তবে খুব বেশি নয়। অল্প পরিমাণ টুথপেস্ট নিয়ে ব্রণের জায়গায় লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
অ্যাসপিরিন
শুধু ঔষধ হিসেবে নয়, এটি পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবেও কাজ করে। ৪-৫ টা ট্যাবলেট গুঁড়ো করে তাতে সামান্য পানি মেশান। এবার স্মুদ একটি মিশ্রণ তৈরি করে ব্রণে লাগিয়ে রাখুন। সারারাত রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ত্বক বেশি সেনসেটিভ হলে ৬-৭ মিনিট পরই হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
কমলার খোসা
কিছু কমলার খোসা নিয়ে ব্ল্যান্ডারে ব্ল্যান্ড করে নিন। পেস্ট তৈরি করে ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগান। ৩০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটিও পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ভালো কাজ করে।
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে মধু-দুধ
সমপরিমাণ মধু ও দুধ মিশিয়ে ব্রণ বা পিম্পলের উপর লাগিয়ে রাখুন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে এটি একটি দারুন ফেসপ্যাক।
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে গোলাপজল-দারুচিনি
১ চামচ দারুচিনি গুঁড়োর সঙ্গে সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্রণের উপর লাগান। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
টমেটো-পাতিলেবু-ওটমিল
১ চামচ টমেটোর রস, ১ চামচ পাতিলেবুর রস ও ১ চামচ ওটমিল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্রণে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কাঁচা হলুদ-চন্দন
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে চন্দন ও হলুদ বেশ পরিচিত। পরিমাণ মতো কাঁচা হলুদ বাটা ও চন্দন গুঁড়ো একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্রণে লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
ওটমিল-মধু
১ চামচ ওটমিল ও ২ চামচ মধু একসঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশিয়ে ব্রণে লাগান। ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে সরিষা-মধু
সামান্য সরিষা গুঁড়ার সঙ্গে ১ চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ব্রণের দাগও দূর করবে।
লেবু-ডিম
পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবে ডিমও ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রথমে মুখের যে যে জায়গায় ব্রণ আছে সেখানে লেবুর রস লাগান। এবার তার উপর ডিমের সাদা অংশ লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
পিম্পল প্রতিরোধে ঘরোয়া পদ্ধতি
পিম্পল দূর করার উপায় গুলো ব্যবহার করে পিম্পল দূর করা সম্ভব হলেও বার বার পিম্পলের ফিরে আসা ঠেকানো যায় না। এরজন্য প্রয়োজন পিম্পল প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া। যদি আপনার মুখে প্রতিনিয়তই পিম্পল দেখা দিতে থাকে তবে আপনি তা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত কিছু ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
শশা
৪-৫ টুকরো শশা পেস্ট করে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সম্ভব হলে প্রতিদিনই পেস্টটি ব্যবহার করুন। অথবা শশা স্লাইস করে কেটে এক গ্লাস পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক দফা মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। এতে ব্রণ অনেকটা প্রতিরোধ হবে।
অ্যালোভেরা জেল
নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারে পিম্পল প্রতিরোধ করা সম্ভব। দিনে ২ বার অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। আপনি চাইলে অ্যালোভেরা কিনে তা থেকে জেল তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যালোভেরা-লেবু
২ চামচ অ্যালোভেরা বা অ্যালোভেরা জেল ও আধা চামচ লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করুন। প্রতিরোধের পাশাপাশি পিম্পল দূর করার উপায় হিসেবেও ফেসপ্যাকটি দারুন কাজ করে।
মুলতানি মাটি-শশা
৩-৪ টুকরো শশা পেস্ট করে রস বের করে নিন। তার সাথে ২ চামচ মুলতানি মাটি মিশিয়ে একটি স্মুদ মিশ্রণ তৈরি করে হালকা ভাবে ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি একদিন পর পর বা সম্ভব হলে প্রতিদিনই ব্যবহার করতে পারেন।
নিমপাতা-গোলাপজল
৮-১০ টি নিমপাতা বেটে পেস্ট করে তার সাথে কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করতে পারেন।
চালের গুঁড়া-পেঁপে-পাতিলেবু
১ চামচ চালের গুঁড়া, ২ টুকরো পাকা পেঁপে ও ১ চামচ পাতিলেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে ম্যাসাজ করুন। ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ফেসপ্যাকটি সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করতে পারেন। এক সপ্তাহ পরই আপনি পার্থক্য বুঝতে পারবেন।
কমলালেবু-মসুরডাল-মুলতানি মাটি
২ কোয়া কমলালেবু, ১ চামচ মসুর ডাল একসঙ্গে বেটে পেস্ট তৈরি করুন। তার সাথে ১ চামচ মুলতানি মাটি খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি মুখে লাগান। ৩০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি শুধু পিম্পল প্রতিরোধেই নয়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
পিম্পল দূর করার উপায় গুলোতে যদি আপনার ত্বকে পিম্পলের প্রকোপ কমে না আসে তাহলে আপনার ব্রণ নিরাময়ের মেডিসিন প্রয়োজন হতে পারে। তবে ব্রণ সারাতে কোন মেডিসিন সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পিম্পল কি?
পিম্পল, একনে বা ব্রণ হলো ত্বকের একটি সাধারণ রোগ; যাতে ত্বকে লালচে ভাব, ফুসকুড়ি, ফুলে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
পিম্পল কেন হয়?
ত্বকের সেবেসিয়াস গ্ৰন্থির ( ত্বকে তেল নিঃসরণকারী এক ধরণের গ্ৰন্থি) মুখে ধুলো-ময়লা জমে পিম্পল জন্ম নেয়। এছাড়া বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা বা অতিরিক্ত ঘাম, দুঃশ্চিন্তা, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, মেকআপ রিমুভ না করা ইত্যাদি কারণেও ব্রণ হতে পারে।
পিম্পল/ব্রণ প্রতিরোধের উপায় কি?
১. ত্বক পরিষ্কার রাখা। দিনে অন্তত দুবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করা।
২. প্রতিবার বাইরে থেকে এসে মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করা।
৩. দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস পানি পান করা।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম।
৫. সপ্তাহে দুদিন ফেস স্ক্রাবিং।
৬. সঠিক মেকআপ প্রোডাক্ট।
পিম্পল বা ব্রণ দূর করার উপায় কি?
ঘরোয়া পদ্ধতিতে পিম্পল দূর করতে সাহায্য করবে-
১. লেবুর রস
২. আদা
৩. অ্যালোভেরা
৪. নিমপাতা
৫. বরফ
৬. গ্ৰিন টি
৭. পেঁপে
মুখের ব্রণ দূর করার ঔষধ ও চিকিৎসা
অ্যান্টিবায়োটিক, বেনজইল পারঅক্সাইড, রেটিনয়েড, হরমোন চিকিৎসা, স্যালিসাইলিক এসিড, নিকোটিনামাইড, আলফা হাইড্রক্সি এসিড, কেরাটোলাইটিক সাবান ইত্যাদি।
প্রয়োজন মনে হলে পড়ে নিতে পারেন-